বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের গভীরতায় জোর দিলেন বিক্রম মিশ্রি এবং জসীম উদ্দিন
- By Jamini Roy --
- 10 December, 2024
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি গতকাল সোমবার ঢাকায় এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। সফরের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করা। বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে নানা ইস্যুতে আলোচনা করেন।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, "আমাদের আকাঙ্ক্ষা হলো অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি, বিশেষ করে সংখ্যালঘু ইস্যুতে। আমরা এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি এবং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা বিষয়টি নজরে রাখবে।"
ভারতের গণমাধ্যমে সংখ্যালঘু ইস্যুতে মিথ্যা তথ্য এবং বিভ্রান্তিকর খবরের বিষয়ে বাংলাদেশ জোরালো আপত্তি জানিয়েছে। জসীম উদ্দিন বলেন, "আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম পালন করে। নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধে ভারত সরকারের শক্ত ভূমিকা প্রত্যাশা করি।"
বৈঠকে সীমান্ত হত্যা নিয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার আহ্বান জানানো হয়। মিশ্রি একমত প্রকাশ করে বলেন, সীমান্তে অপরাধ দমনে উভয় দেশকেই আরও সক্রিয় হতে হবে।
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে নানা বাধা দূর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। জসীম উদ্দিন বলেন, "ভারত থেকে প্রায় ২,৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছি। নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আনার জন্য ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন।"
বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা সহজীকরণ এবং আটক জেলেদের মুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়। মিশ্রি জানান, "মানুষকেন্দ্রিক সম্পর্কই আমাদের অগ্রাধিকার। আমরা এ বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করব।"
বিক্রম মিশ্রি বলেন, "বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ইতিবাচক, গঠনমূলক, এবং লাভজনক সম্পর্ক গড়ে তোলার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে।" উভয় দেশের জনগণের উপকারে আসবে এমন সম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, "আমরা অতীতের মতো ভবিষ্যতেও একসঙ্গে কাজ করতে চাই।"
এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও মজবুত হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও যৌথ সহযোগিতার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও উন্নত সম্পর্ক গড়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।